আগামী রোববার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকাসহ সারা দেশের জেলা সদরে গুম-খুনের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানববন্ধন করবে বিএনপি। তবে আজ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হলেও আগেই এই খবর লোকমুখে প্রচার হতে থাকে। আর এই প্রচারের জেরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়ে রেখেছে মানববন্ধনে মামলার আসামী পেলে তারা গ্রেপ্তার করবেন। যদিও বিএনপির প্রায় সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নামে মামলা চলমান রয়েছে বলে তারা দাবি করছে।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) বিকালে ভার্চুয়াল এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচির প্রস্তুতির কথা জানান।
তিনি জানান, ‘ঢাকায় মানববন্ধন হবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১১টায়। এই বিষয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপি সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এবং ঢাকার বাইরে অন্যান্য জেলাসমূহে মানববন্ধনে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য তারা প্রস্তুতি নিয়েছেন। ’
রিজভী আরও বলেন, ‘সরকারের দিক থেকে যদি বাধা-বিপত্তি আসে তবে সব বাধাকে প্রতিহত করে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে এই মানববন্ধন কর্মসূচি সফল করতে হবে। ঢাকাসহ সারা দেশের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের বলব, নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার, গুম-খুন হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসে আপনারা মানববন্ধনে উপস্থিত করবেন।
উল্লেখ্য, বিএনপির এর আগে দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি গত বুধবার থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় শুক্রবার সকাল ৬টায়।
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশ পণ্ড করে দেওয়ার পর থেকে বিএনপি হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে। সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচন এবং তফসিল বাতিলের দাবিতে দশম দফায় ২০ দিন অবরোধ এবং তিন দফা চারদিন হরতাল কর্মসূচি করেছে।
৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য নেতা-কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘এই কর্মসূচি অনাচারের বিরুদ্ধে, অবিচারের বিরুদ্ধে, অত্যাচারের বিরুদ্ধে। একটা কর্তৃত্ববাদী সরকার যে জনগণের কাঁধের ওপর আরব্য উপন্যাসের দৈত্যের মতো চেপে বসেছে। যার কাছে মানবতা, মানবাধিকার, মানুষের নাগরিক অধিকারের কোনো দাম নেই। ’
তিনি আরও বলেন,‘আজকে একটি জাতির সমস্ত সম্ভাবনা, একটি জাতির অগ্রগতি, একটি জাতির এগিয়ে যাওয়া সকল কিছুকে স্তব্ধ করে দিয়ে নিজের হাতের ক্ষমতায় ধরে রাখার জন্য স্বৈরাচারে রূপান্তরিত হয়েছে আওয়ামী সরকার। তারা দেশ থেকে, রাষ্ট্র থেকে, সমাজ থেকে সত্য কথা ভুলিয়ে দিতে চাচ্ছে। তারা ন্যায় বিচার বিবেককে অন্তর্হিত করছে, নিরুদ্দেশ করতে চাচ্ছে। এরকম একটি পরিস্থিতি তৈরি করেছে যেখানে সত্য কথা, মানুষের অধিকারের পক্ষে কথা বলা সবচাইতে বড় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা বলাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়, অন্যায় হিসেবে গণ্য করা হয়। ’
গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৫ অধিক নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সাতটি মামলায় সাড়ে ৮০০ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। ’