অন্য পেশার তুলনায় সাংবাদিকদের আয়ুর জায়গাটায় সমস্যা হচ্ছে। সাংবাদিকদের মৃত্যু হার বেশি, শেষ বয়সে অসহায় হয়ে যান। সন্তান যাদের কাছে নেই, ওষুধপত্র খাওয়ার মতো সঙ্গতি নেই। বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ এসব কথা বলেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী সার্কিট হাউস মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম কিস্তির অনুদানের চেক বিতরণ উপলক্ষ্যে ‘সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষা ও কল্যাণে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় রাজশাহী বিভাগের ৫ জেলার (রাজশাহী, বগুড়া, নাটোর, নওগাঁ ও পাবনা) ২৬ জন সাংবাদিকের মাঝে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে এম আবদুল্লাহ বলেন, প্রবীণ সাংবাদিকদের আর্থিক অনুদানের নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করছি। অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করছি আমি মাস ছয়েক দায়িত্বে থাকলে প্রবীণ সাংবাদিকদের জন্য ভাতা চালু করে যাব।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরি করা হবে। যারা পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে মামলা-মোকদ্দমার শিকার হন, তাদের আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য একটি ল’ইয়ার্স প্যানেল গঠন করা হবে। এছাড়া সরকারি অনুদানের জন্য যোগ্য প্রত্যেক সাংবাদিককে পর্যায়ক্রমে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের ৩৫০ জন সাংবাদিকের জন্য সম্মানি বরাদ্দের ব্যবস্থা করেছিলাম, সেটি শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বরিশাল ও সিলেট দিয়ে প্রথম কিস্তি শেষ হবে। বিভাগীয় শহর ও বৃহত্তর জেলাগুলোতে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের উপদেষ্টা অত্যন্ত সাংবাদিকবান্ধব। তিনি সাংবাদিকদের কাজের ওপর কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করেন না এবং সাংবাদিকরা এখন সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছেন। গায়েবি জায়গা থেকে ফোন যায় না। আরো কিছু সুখবর আসতে যাচ্ছে।
মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, চিকিৎসার জন্য কী করা যায়, পথ খুজছি। বিশেষভাবে ঢাকায় বড় হাসপাতালে চুক্তির আওতায় সাশ্রয়ী রেটে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করছি। আমাদের নিজস্ব জায়গা বরাদ্দ নেওয়া যায় কিনা সেই প্রাণান্তকর চেষ্টা করছি। যদি নিতে পারি হাই রেস বিল্ডিং হবে। কল্যাণ ট্রাস্টের নিজস্ব অফিস হবে, হাসপাতাল হবে, ডরমিটরি থাকবে, ঢাকার বাইরের সাংবাদিকরা নামমাত্র খরচে যাতে থাকতে পারেন। এছাড়া ভবনের ভাড়া দিয়ে আর্থিকভাবে শক্তিশালী হওয়া যাবে। হাসপাতালে সাংবাদিকরা বিশেষ সুবিধায় চিকিৎসা পাবেন, সেটা চিন্তা-ভাবনায় রয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) টুকটুক তালুকদার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মুহা: আব্দুল আউয়াল ও সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার সভাপতি গণেশ দাস।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব ও রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন। বক্তব্য দেন রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট কথাশিল্পী ডা. নাজিব ওয়াদুদ, সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট গবেষক সরদার আব্দুর রহমান, এটিএন বাংলার রাজশাহী প্রতিনিধি সুজাউদ্দিন ছোটন প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন