এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের অনিয়ম তদন্ত করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। দেশের পুঁজিবাজার ও ব্যাংক খাতে নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এবার ব্যাংকের অনিয়মের বিষয়গুলো তদন্ত করতে মাঠে নামতে যাচ্ছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংক খাত ও আমানতকারীদের জন্য সেই অনিয়ম কতটা ক্ষতিকারক তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে উঠে আসে। এরপর সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে অভিযুক্তর কাছে কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়ে একটি নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হয়। জবাব পাওয়ার পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটিতে একটি শুনানি হয়। এসব কিছু নিশ্চিত হওয়ার পরেই একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পরিচালক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বিগত সরকারের আমলে দেশের পুঁজিবাজারে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এসব অনিয়মের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ে পারভেজ তমাল। অভিযোগ রয়েছে, এনআরবিসির চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল, সাকিব আল হাসান, জাভেদ এ মতিন, ফরচুন শুজের মিজানুর রহমান ও আদনান ইমামরা ছিলেন বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত ইসলামের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে গড়ে ওঠা চক্র। কারসাজির মাধ্যমে তাঁরা বিভিন্ন শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটিয়ে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পরেও কেন এনআরবিসির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না-এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ধীরে ধীরে প্রত্যেকটা ব্যাংক নিয়ে কাজ করবে। এখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১১টি ব্যাংক নিয়ে কাজ করছে, বিশেষ করে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো নিয়ে। এনআরবিসি ব্যাংকের বিষয়টি বিশেষভাবে নোট রাখলাম। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে এবিষয়ে কথা বলবো, যাতে করে তরান্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
বিভিন্ন ব্যাংকের অনিয়মে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনেকে জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগনামা এখনো দাখিল হয়েছে বলে জানা নেই। যদি হয় স্টাফ রেগুলেশনে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বেনামে অনেক অভিযোগ আসে। আমাদের এইচ আর সেটা খতিয়ে দেখে। গর্ভনর বরাবর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না এলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না। যারা বিভিন্ন ব্যাংকে পর্যবেক্ষক হিসেবে ছিলেন তারা প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে এটা নিয়ে আমি কিছু বলতে পারি না।
তিনি বলেন, পাচার করা অর্থ ফরমাল চ্যানেলে হলে বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করবে। কিন্তু হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার হলে সেটা তদন্ত করা কঠিন। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এ বিষয় নিয়ে কাজ করছে। তবে এসব বিষয়ে বিএফআইইউ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে কোনো তথ্য শেয়ার করে না।
ঋন অনিয়ম নিয়ে কাজের অগ্রগতি বিষয়ে তিনি বলেন, আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ ইতিমধ্যে অনেক ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে। এ বিষয়েও তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে কোনো তথ্য দেয়নি।
আপনার মতামত লিখুন