পুলিশবাহিনী নিয়ে নাগরিক ভাবনা
পুলিশঃ দেশের এই বাহিনীটার উপর মানুষ প্রচণ্ড বিক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভ হতেই আজকের এই বিস্ফোরণ।
এবার থামেনঃ পুলিশের কর্মবিরতির কারণেই এখন দেশের অধিকাংশ বিপণীকেন্দ্র গুলো বন্ধ। এর মানে কী? নিশ্চই নিরাপত্তা হীনতা।
মাথাঠাণ্ডা করুনঃ মাঠপর্যায়ের অধিকাংশ পুলিশ উচ্চপর্যায় অফিসারদের হুকুমের গোলাম। গোলাম!
গোলাম শব্দটা কেমন যেনো লাগতেছে। হ্যাঁ ভাইয়া। লাগলেও কিছু করার নেই।
এরা সাধারণ পরিবার হতে অনেক টাকা ঘুষের মাধ্যমে চাকরিটা পেয়ে থাকে। যেকারণে তাদেরকে একপ্রকার আধুনিক দাসের মতোই চাকরি জীবনটা পার করতে হয়। এদের বেশিরভাগেরই না আছে রাজনৈতিক অভিলাষ, না আছে পারিবারিক আর্থিক স্বচ্ছলতা। অগত্যা নিরুপায়।
দেখলেনতোঃ মূল হুকুমদাতা ও তার কাছাকাছি যারা তারা কিন্তু কেউ ক্ষোভের আগুনে আঙ্গার হয়নি। হলো কারা? মাঠপর্যায় থাকা পুলিশ সদস্যরা। ক্ষতি হলো আমাদের টাকায় গড়া স্থাপনা ও যন্ত্রপাতি।
কেনো হলোঃ প্রতিটা বিপ্লবের পরে এরকমটা বহু দেশেই হয়েছে। এটা নির্যাতিত নিপীড়িত নাগরিকদের বহিঃপ্রকাশ। তবে এরকমটা যেনো পর্যায়ক্রমে চলতে না থাকে। যদি চলতেই থাকে তাহলে বিপর্যস্ত প্রশাসনের কারণে, আমরাই আবার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হব।
প্রতিকারঃ পুলিশ বিভাগ যেনো রাষ্ট্রের শাসক দ্বারা আধুনিক দাসে পরিণত হতে না পারে,সেই জন্য সবার আগে নাগরিক সমাজের সচেতনতা প্রয়োজন। ঘুষ,স্বজনপ্রীতি থেকে পুলিশ সদস্য মনোনীত হবার পন্থা সমূলে উৎপাটন করে ফেলতে হবে।
তাদের নৈতিকতা উন্নয়নে কাউন্সিলিং সহ বিভিন্ন দুর্বল বিষয়গুলো খুঁজে বের করে, জরুরী ভিত্তিতে সমাধান করার মাঝেই নিহিত রয়েছে জননিরাপত্তা ও দেশের উন্নয়ন।
মনে রাখতে হবেঃ পুলিশ বাহিনীর উপর বিক্ষুব্ধচিত্ত নাগরিক সমাজের মানসিকতা পরিহার করতে হলে, শাসকগণকে নিরেপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে মূল হুকুমদাতাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে নির্যাতিত জনগণকেও ধৈর্যশীল হতে হবে।
চলুন এবার আগের মতোই পরিচিত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে সেলফি তুলে, ফেসবুকে পোস্ট করে ভাইভাই হয়ে যাই।
ভাইভাই! ভাই হয়ে যাবার সুযোগে আপনারা পুলিশ বাহিনীও আবার আগের রুপে যেনো ফিরে আসতে না হয়,সেদিককার ব্যপারগুলো আপনাদেরকেই খেয়াল রাখতে হবে। আর যেনো আপনাদেরকে শাসকদের হুকুমের দাসের মত বিবেক বিবর্জিত কর্মকান্ড কিংবা নাগরিকদের ন্যায্য অধিকারের বিপরীতে দাঁড় না হতে হয়। দেশের জনগণের বিরুদ্ধে হানাদের মত ভূমিকা পালন করতে না হয়। দেখলেনতো এই দেশের মানুষ ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য কীভাবে অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিতে জানে। সুতরাং সাবধান। অনুরোধ শব্দটা ব্যাবহার না করে সাবধান লিখলাম কারণ, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কর্মচারী।
আহবান জানাই নাগরিকদের প্রতি, আর নয় পুলিশ সদস্য ও থানা ভবনে আক্রমণ। উনারা আমাদেরই বাংলাদেশি। আমার আপনার ভাই। সেই সঙ্গে তীব্রভাবে নিন্দা জানাই যমুনা টেলিভিশন এর বার্তা অনুযায়ী, ভারতীয় ৮০ হাজার নাগরিকের পুলিশবাহিনীতে কর্মস্থল হওয়ার জন্য। অনতিবিলম্বে তাদের প্রত্যাহারের দাবি জানাই। এই দাবি বাংলাদেশি নাগরিক পুলিশ সদস্যদেরও প্রধান এজেন্ডা হওয়া অতিব জরুরী।
লেখকঃ জাভেদ হাকিম, লেখক ও ট্রাভেলার।
আপনার মতামত লিখুন