এনভিডিয়ার বাজার মূলধন হবে ৪৯ লাখ কোটি ডলার
বিশ্বের ডেটা সেন্টারগুলোতে এআইভিত্তিক চিপ ব্যবহারের চাহিদা প্রতিবছর ৬০ শতাংশ হারে বাড়ছে। আগামী ১০ বছর প্রবৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডেটা সেন্টারে এআই চিপ ব্যবহারের এই প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে অন্যতম চিপ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার শেয়ারপ্রতি আয় হবে ১ হাজার ৩৫০ ডলার; শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থের প্রবাহ হবে ১ হাজার ডলার। এই নগদ প্রবাহ প্রবৃদ্ধির হার প্রতিবছর ৫ শতাংশ হলে পরবর্তী ১০ বছরে এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম ২০ হাজার ডলারে উঠতে পারে; এই প্রক্রিয়ায় এনভিডিয়ার বাজার মূলধন ৪৯ ট্রিলিয়ন বা ৪৯ লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হতে পারে। এসব দাবি জেমস আন্ডারসনের।
একসময় টেসলা ও আমাজনের মতো প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছেন জেমস অ্যান্ডারসন। প্রযুক্তি জগতের অন্যতম এই সেরা সেই বিনিয়োগকারী এনভিডিয়া সম্পর্কে বড় ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। তিনি বলেছেন, আগামী এক দশকের মধ্যে এই কোম্পানির বাজার মূলধন ৫০ ট্রিলিয়ন বা ৫০ লাখ কোটি ডলারের পৌঁছাতে পারে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক সংবাদে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
জেমস অ্যান্ডারসন মনে করেন, বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের যে বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে এবং সেই প্রযুক্তির উত্থানে এনভিডিয়া যেভাবে কেন্দ্রস্থলে রয়েছে, তাতে এনভিডিয়ার বাজার মূলধন ৫০ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে। অর্থাৎ আগে তিনি যেসব প্রযুক্তি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন; সেই কোম্পানিগুলোর তুলনায় বর্তমানে এনভিডিয়ার সম্ভাবনা আরও কয়েক গুণ বেশি।
খবরে বলা হয়েছে, এনভিডিয়া মূলত চিপ তৈরি করে থাকে। এখন যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ হচ্ছে, সেই বিকাশ সম্ভব হচ্ছে এনভিডিয়ার চিপের কল্যাণে। এই চিপ ব্যবহারের মাধ্যমেই চ্যাটজিপিটি বিস্ময়কর সব কাজ করে দিচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই এই কোম্পানির এখন বাড়বাড়ন্ত। গত জুন মাসে এনভিডিয়ার বাজার মূলধন তিন ট্রিলিয়ন বা তিন লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। কিছুদিনের জন্য তারাই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি।
জেমস অ্যান্ডারসন আরও বলেন, এনভিডিয়ার ধারাবাহিকভাবে দ্রুত প্রবৃদ্ধি, হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার খাতে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা এবং কোম্পানির সংস্কৃতি ও নেতৃত্ব—এই জিনিসগুলোই বিনিয়োগকারীরা খোঁজেন।
অ্যান্ডারসন বেইলি গিফর্ড নামের এক কোম্পানিতে প্রায় চার দশক কাজ করেছেন। সেখানে তিনি স্কটিশ মর্টগেজ ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্ট নামের একটি তহবিল পরিচালনা করতেন; ২০১৬ সালে এই কোম্পানি প্রথম এনভিডিয়ায় বিনিয়োগ করে। এর পরেই এনভিডিয়ার দ্রুত উত্থান শুরু হয়।
এরপর এনভিডিয়ার পরিচালনা পর্ষদে জায়গা নেওয়ার পরও জেমস অ্যান্ডারসন ঠিক জানতেন না, এই কোম্পানির প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি কী হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আসলে কিছুই ঠিক করিনি যে গেমিং, ক্রিপ্টো নাকি এআই—এগুলোর মধ্যে কোনটা হবে কোম্পানির মূল চালিকা শক্তি।’
এর আগে অ্যান্ডারসন টেসলা ও আমাজনের মতো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিলেন; কিন্তু ওই সব কোম্পানিতে বিনিয়োগের সঙ্গে এই সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনকারী কোম্পানিতে বিনিয়োগের পার্থক্য নিয়ে তিনি বলেন, ওই কোম্পানিগুলো ঠিক এনভিডিয়ার মতো উচ্চ মুনাফা পেত না।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকে অন্তর্ভুক্ত কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত বাজার মূলধন প্রায় ৪৭ ট্রিলিয়ন বা ৪৭ লাখ কোটি ডলার।
আপনার মতামত লিখুন