প্রচন্ড তাপপ্রবাহে গবাদিপশু-মুরগি পালনে হিমশিম খাচ্ছেন খামারীরা
সিরাজগঞ্জে তীব্র তাপপ্রবাহ ও প্রচন্ড গরমে গবাদিপশু ও মুরগি পালনে হিমশিমে পড়েছে খামারীরা। এতে দুধ ও ডিমের উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে এবং হিটস্ট্রোকে মারাও যাচ্ছে গবাদিপশু ও মুরগি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দুগ্ধ ভান্ডার বলে খ্যাত সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া ও এনায়েতপুরসহ বিভিন্ন স্থানে গবাদিপশু ও মুরগির খামারে দুধ ডিম উৎপাদন কমে গেছে এ প্রচন্ড গরমে। তবে বাঘাবাড়ি, রেশমবাড়ি, রাউতারা, পোতাজিয়া, নাকালিয়া বেড়াসহ বাঘাবাড়ি মিল্কভিটার আওতাভুক্ত বিভিন্ন খামারের গাভি স্বাভাবিক খাবার খেতে পারছে না।
এতে খামারে দুধ ও ডিম উৎপাদন অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। স্থানীয় খামারীরা বলেন, প্রচন্ড গরমে খামারের গাভির দুধ উৎপাদন কিছুটা কমে গেছে। অনেক খামারের গাবী ও বাছুর মারা গেছে। এ গরমে খামারগুলোতে প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে কোনো নজরদারি নাই। যেকারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে অনেক খামারে কৃত্রিম উপায়ে শীতল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর মুরগির খামার পরিস্থিতি আরো করুণ। এ গরম জনিত কারণে অনেক মুরগিও মারা যাচ্ছে। হতাশায় পড়েছে গবাদি পশু ও মুরগির খামারীরা।
এ বিষয়ে দুগ্ধ উৎপাদন সমিতির কর্মকর্তারা বলেন, সমিতির খামারিরা প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন করলেও এই গরমে এ উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। সেইসাথে বেড়েছে গোখাদ্যের দাম। গো-খাদ্যের চেয়ে দুধের দাম কম। খামারিরা বাধ্য হয়ে গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন। বাঘাবাড়ি মিল্কভিটার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, এ অঞ্চলে প্রচন্ড গরমের কারণে দুধের উৎপাদন কমেছে। মিল্ক ভিটার টার্গেট প্রতিদিন গড়ে ৯০ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ। এখন খামারিরা ৫০ হাজার লিটারের বেশি দুধ দিতে পারছেন না। এদিকে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগী উৎপাদন করা হয়। এসব খামারে ডিম উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে এবং হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে মুরগি।
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, অব্যাহত তীব্র তাপপ্রবাহ একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এ দূর্যোগ থেকে কেটে ওঠার জন্য ইতিমধ্যেই জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। গরমে কোনো পশুর সমস্যার তথ্য পেলে ব্যবস্থা নিচ্ছি। তাপপ্রবাহে গবাদিপশু খাওয়া কমিয়ে দেয়। এ কারণে দুধের উৎপাদন সামান্য কমে গেছে। তবে তাপমাত্রা কমে গেলে আবার উৎপাদন স্বাভাবিক হবে। অব্যাহত প্রচন্ড গরমে মুরগির খামারের অবস্থা ঝুকিপূর্ণ। তবে টিনের শেডে চট ভিজিয়ে রাখতে বলা হয়েছে মুরগি খামারীদের। ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি খেতে দিতে হবে। ইতিমধ্যেই খামারিদের বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে এবং সকল কর্মকর্তাকে মাঠে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।###
আপনার মতামত লিখুন